Tuesday 14 July 2015

ড্রইংরুমে শখের বাগান || “টেরারিয়াম”

ইট-কাঠের এই যান্ত্রিক নগরে একটুখানি সবুজ সানিধ্যের আশায় আমরা কত কিছুই না করি। ছোট বেলায় আমরা অনেকেই সখের বসে বোতলে মানিপ্ল্যান্ট গাছ লাগিয়ে যত্ন করেছি।  নতুন করে যখন একটি-দুটি পাতা গজাতো তখন কি যে আনন্দ হতো, যারা এই চর্চা করেছেন তারাই জানেন। এখন আবার যদি আমরা সেই অনুভূতি পেয়ে যাই তাহলে কেমন হয়। আসুন জেনে নেই টেরারিয়াম কি ?

টেরারিয়াম এর সাথে অ্যাকুয়ারিয়াম শব্দটার কেমন যেন একটা মিল আছে তাই না? ঠিকই ধরেছেন। যখন কাচের চৌবাচ্চায় রঙিন মাছ পোষা হয় তাকেই অ্যাকুয়ারিয়াম বলে। আর ছোট একটি কাচের পাত্র বা বোতলের মধ্যে বিশেষ কিছু গাছ বা লতা-গুল্ম (যে সকল গাছ ছায়াতেও দীর্ঘ দিন সতেজ থাকে) লাগিয়ে ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর যে শিল্প, সেটিই টেরারিয়ামকাচের বোতলে করা হয় বলে অনেকে এটাকে ‘বটল গার্ডেন’ও বলে থাকে।





কিভাবে তৈরী করবেন টেরারিয়ামঃ 
সকল উপকরণই আছে আপনার হাতের নাগালে। প্রথমে লাগবে কাঁচের ফিশবোল, জার বা বড় অ্যাকুয়ারিয়ামের পাত্র, কিছু পাথরের টুকরো, কাঠ-কয়লা বা চারকোল, নুড়ি পাথর, মাটি, পুরোনো দেয়ালে জন্মানো মস, ঘরের ভিতরে জন্মায় এমন তিন-চার প্রকারের গাছ

   


তৈরীর পদ্ধতিঃ 
খুব বেশি পয়সা খরচ করতে হবে না এটি তৈরীতেআবার বেশি ঘামও ঝরাতে হয় না। 
(১) কাচের পাত্রের নিচে ছোট ছোট পাথরের টুকরো দিয়ে দেড় ইঞ্চি পুরু স্তর বানাতে হবে। এর পর দিতে হবে কাঠ-কয়লার স্তর। এই দুটি স্তর অতিরিক্ত পানি শোষন করে নেবে। একই সঙ্গে কাঠ-কয়লা বাতাস চলাচলে সহায়তা করবে।
(২) পাথর ও কাঠ-কয়লার স্তরের ওপর ব্যবহার করতে হবে মাটির স্তর। তবে এ মাটির স্তরের পুরুত্ব নির্ভর করবে কী ধরনের গাছ লাগাবেন তার ওপর। 
(৩) এবার পছন্দ মতে তিন-চার প্রকারের গাছ লাগিয়ে নূড়ি-পাথর দিয়ে ডেকোরেশান করা যেতে পারে। গাছ পছন্দের ক্ষেত্রে
সাকুলেন্ট জাতীয় (যেসকল গাছ কাণ্ড, শাখা-প্রশাখা, পাতা বা মূলে পানি জমিয়ে রাখে) গাছ নির্বাচন করা যেতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফার্ন ও মস রাখা যেতে পারে।

(৪) সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য পছন্দ অনুযায়ী প্লাস্টিকের ছোট খেলনা রাখা যেতে পারে।
(৫) সর্বশেষে হালকা পানি দিয়ে নির্ধারিত জায়গায় রেখে দেয়া যেতে পারে।






পরবর্তি পরিচর্যা ও পানি প্রয়োগঃ


(১) টেরারিয়ামে প্রয়োজন অনুযায়ী পানি স্প্রে করতে হবে। অতিরিক্ত পানি দেয়া যাবে না।
(২) অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে কাচের গায়ে জলীয় বাষ্প জমলে ওপরের ঢাকনাটা খুলে দিতে হবে। 
(৩) বিভিন্ন পোকার সংক্রমণ থেকে গাছকে বাঁচাতে কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে।


প্রাপ্তিস্থানঃ
টেরারিয়াম বাংলাদেশে এখনো ততোটা জনপ্রিয় না হলেও ঢাকার অভিজাত এলাকায় বিশেষ করে গুলশান, বনানী, বারিধারা, ধানমন্ডির অভিজাত ফুল বা গাছের দোকান টেরারিয়াম পাওয়া যেতে পারে। পাঁচ তারা হোটেলে কিংবা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে প্রায়ই টেরারিয়াম দেখা যায়। টেরারিয়ামের মূল্য নির্ভর করে অবকাঠামো কিংবা উপাদানের ওপর। তবে যদি নিজে তৈরী করেন তার আকর্ষনই আলাদা।

ভালো খাকবেন সবাই। আগাম “ঈদ মোবারক”।

আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন
http://soukhin.com.bd/?p=3022



No comments:

Post a Comment